
রোজেলা ফুলের ইতিহাস (History of Roselle Flower)
রোজেলা ফুলের ইতিহাস (History of Roselle Flower)
এই ফুল, যা মেস্তা বা চুকাই নামেও পরিচিত, এর একটি দীর্ঘ এবং আকর্ষণীয় ইতিহাস রয়েছে। এই ফুলটি মূলত পশ্চিম আফ্রিকার স্থানীয় উদ্ভিদ, তবে ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে এটি পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ এবং এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তখন থেকেই এটি বহু স্থানে স্থানীয় উদ্ভিদের মর্যাদা লাভ করেছে।
ধারণা করা হয় যে, সুদানে প্রায় ৪০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রক্তজবা এবং কেনাফ (পাটজাতীয়) গাছের প্রথম চাষ শুরু হয়েছিল। প্রথমে এর ভোজ্য বীজ এবং পরবর্তীতে পাতা, কচি ডাল ও ফুলের বিভিন্ন অংশের জন্য এটি চাষ করা হতো।
১৬ শতাব্দীর শুরুতে, দাস ব্যবসার মাধ্যমে রক্তজবা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছায়। সেখানকার মানুষ এর পাতা ও বৃতি ব্যবহার করতে শুরু করে। ধীরে ধীরে, ঔষধি গুণাগুণের জন্য এবং বিভিন্ন খাদ্য ও পানীয় তৈরিতে ব্যবহারের জন্য এই ফুলটি জনপ্রিয়তা লাভ করে।
ভারতে, অন্ধ্রপ্রদেশ অঞ্চলে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে স্থানীয়রা প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো রক্তজবা সংগ্রহ করে ব্যবহার করে আসছে। মায়ানমারের ইরাবতী নদীর তীরেও এই গাছ প্রাকৃতিকভাবে জন্মে।
বাংলাদেশে এই ফুল "মেস্তা" বা "চুকাই" নামে পরিচিত। এর পাতা সবজি হিসেবে এবং ফল টক স্বাদের জন্য ব্যবহৃত হয়। শুকনো রক্তজবা ফুল থেকে চা এবং বিভিন্ন পানীয় তৈরি করা হয়। এছাড়াও, এর ডাল থেকে আঁশও পাওয়া যায়, যা পাটের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
বর্তমানে, বিশ্বের অনেক দেশেই বাণিজ্যিকভাবে রক্তজবার চাষ করা হয়। এর ঔষধি গুণাগুণ এবং বিভিন্ন ব্যবহারের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল হিসেবে বিবেচিত হয়। রক্তজবা শুধু একটি সুন্দর ফুলই নয়, বরং এর ঐতিহাসিক এবং ব্যবহারিক গুরুত্বও অনেক।